স্যামসাংয়ের মুনাফা প্রত্যাশার চেয়ে কম, প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার কারণে দুঃখপ্রকাশ

 স্যামসাংয়ের মুনাফা প্রত্যাশার চেয়ে কম, প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার কারণে দুঃখপ্রকাশ


            স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স সম্প্রতি তাদের তৃতীয় প্রান্তিকের আয় প্রত্যাশার চেয়ে কম হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। বিশেষ করে, উচ্চমানের চিপ সরবরাহে প্রতিযোগীদের থেকে পিছিয়ে পড়ার ফলে প্রতিষ্ঠানটি এই আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি। স্যামসাং জানিয়েছে, একটি বড় গ্রাহকের জন্য AI চিপ সরবরাহে বিলম্ব হয়েছে, আর চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীরা প্রচলিত চিপের সরবরাহ বাড়িয়ে ফেলেছে। এর প্রভাব পড়েছে তাদের সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসায়।


            তিন দশক ধরে বিশ্বের শীর্ষ মেমোরি চিপ নির্মাতা হওয়া সত্ত্বেও, স্যামসাং বর্তমানে প্রচলিত এবং উন্নত উভয় ধরনের চিপ ব্যবসায় প্রবল প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। AI চিপের বাজারে স্যামসাংয়ের প্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে দেরিতে আসায় প্রতিষ্ঠানটি এখনো প্রচলিত কম মুনাফার চিপের উপর নির্ভরশীল। এতে করে তারা চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে প্রতিযোগিতায় দুর্বল হচ্ছে, সেইসাথে স্মার্টফোন ও পিসির বাজারের ক্রমশ হ্রাস পাওয়া চাহিদাও মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।


            তৃতীয় প্রান্তিকে স্যামসাং আনুমানিক ৯.১ ট্রিলিয়ন ওয়ন ($৬.৭৮ বিলিয়ন) মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছে, যা বাজারের প্রত্যাশিত ১০.৩ ট্রিলিয়ন ওয়নের তুলনায় কম। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২.৪৩ ট্রিলিয়ন ওয়ন, আর গত প্রান্তিকে ছিল ১০.৪৪ ট্রিলিয়ন ওয়ন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ফলাফল বাজারের জন্য একটি বড় ধাক্কা।


            BNK ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক লি মিন-হি বলেন, "বর্তমান প্রান্তিকেও তাদের আয় বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। তারা Nvidia-র মতো AI নেতাদের কাছে উচ্চ ব্যান্ডউইথ মেমোরি (HBM) চিপ সরবরাহে SK Hynix-এর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।"


           চিপ শিল্পে পুনরুদ্ধারের আভাস পাওয়া গেলেও, AI সার্ভারে ব্যবহৃত উচ্চ মুনাফাযুক্ত চিপের বাজারে স্যামসাংয়ের দেরি তাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে ক্ষুণ্ণ করেছে। SK Hynix ইতোমধ্যেই AI বাজারে Nvidia-র জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে HBM চিপ সরবরাহ করছে।


          স্যামসাংয়ের ডিভাইস সলিউশন ডিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াং হিউন জুন জানান, "আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন এবং স্যামসাংয়ের সংকটের কথা বলেছেন। তবে আমরা এই চ্যালেঞ্জকে একটি সুযোগে রূপান্তর করতে চাই এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"


         ২০২৪ সালে স্যামসাংয়ের শেয়ারমূল্য ইতোমধ্যেই ২০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। আয় নির্দেশনার পর তাদের শেয়ারমূল্য আরও ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।


        অবস্থার উন্নতি করার জন্য স্যামসাংকে এখন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় মনোনিবেশ করতে হবে, তবে তাদের প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা এবং বাজার পুনরুদ্ধার কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে।



Post a Comment

Previous Post Next Post