দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় সামস্যাংয়ের মুনাফা চারগুণ বৃদ্ধি, তবু চ্যালেঞ্জের মুখে
সামস্যাং ইলেকট্রনিক্সের তৃতীয় প্রান্তিকে(প্রান্তিক মানে হলো বছরের তিন মাসের একটি সময়কাল, যেমন জানুয়ারি-মার্চ, এপ্রিল-জুন ইত্যাদি। ব্যবসায়িক রিপোর্টিংয়ে সাধারণত এক বছরে চারটি প্রান্তিক থাকে।) মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও, পুনরুদ্ধারের গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে এসেছে। চিপের চাহিদা বাড়লেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) খাতে দ্রুত সাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতার চাপে পড়ছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামস্যাংয়ের অপারেটিং মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১০.৩৩ ট্রিলিয়ন ওন (প্রায় ৭.৬৭ বিলিয়ন ডলার), যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চার গুণের বেশি। তবে আগের প্রান্তিকের ১০.৪৪ ট্রিলিয়ন ওনের তুলনায় খুব বেশি পার্থক্য নেই।
বিশ্ববাজারে সেমিকন্ডাক্টর খাতে ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা গেলেও, স্মার্টফোন ও পিসির জন্য ব্যবহৃত চিপের চাহিদা এখনো খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি। এদিকে, এআই চিপের বাজার ধরতে প্রতিদ্বন্দ্বী SK Hynix এবং Micron-এর তুলনায় সামস্যাং কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, যা তাদের মুনাফার উপর প্রভাব ফেলছে।
সামস্যাংয়ের চিপ ব্যবসা থেকে ৫.৫ ট্রিলিয়ন ওন মুনাফা আসার সম্ভাবনা থাকলেও, এটি আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই চিপের বাজারে দেরিতে প্রবেশ করার পাশাপাশি চীনের বাজারে তাদের বেশি নির্ভরতা এবং স্মার্টফোন চিপের দুর্বল চাহিদা সামস্যাংকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বিশ্লেষক ড্যানিয়েল কিমের মতে, DRAM চিপের বাজারে চাহিদার সংকট হলে সামস্যাংকে SK Hynix-এর চেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে, কারণ এই খাতে তাদের ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি।
অন্যদিকে, Micron সম্প্রতি এআই শিল্পে ব্যবহৃত মেমোরি চিপের উচ্চ চাহিদার কারণে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে, যা সামস্যাং-এর জন্য আরও প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সামস্যাংয়ের নন-মেমোরি চিপ ব্যবসা এখনও ক্ষতির মুখে, যেখানে TSMC-এর মতো শক্তিশালী প্রতিযোগীদের সাথে তারা তাল মেলাতে পারছে না। উপরন্তু, খরচ কমাতে সামস্যাং বিদেশি কিছু বিভাগে ৩০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কোম্পানির বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতিফলন।
যদিও সামস্যাংয়ের মুনাফা বেড়েছে, তবে বাজারের দ্রুত পরিবর্তন ও প্রতিযোগিতার মুখে তাদের সামনে কঠিন সময় আসছে।