টেলিগ্রাম: সাউথ-ইস্ট এশিয়ার অপরাধের আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট?
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অপরাধী চক্রের জন্য 'আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট' হিসেবে টেলিগ্রাম ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। সোমবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অঞ্চলের শক্তিশালী অপরাধ চক্রগুলো টেলিগ্রাম ব্যবহার করে তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা অপরাধ জগতের প্রচলিত পদ্ধতিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেলিগ্রামের বিশাল চ্যানেলগুলোতে খুব কম নজরদারির মধ্যে হ্যাক করা ডেটা, যেমন ক্রেডিট কার্ড তথ্য, পাসওয়ার্ড এবং ব্রাউজারের ইতিহাস বেচাকেনা হচ্ছে। এছাড়াও, সাইবার অপরাধের নানা সরঞ্জাম, যেমন ডিপফেক সফটওয়্যার এবং ডেটা চুরি করার ম্যালওয়্যারও পাওয়া যাচ্ছে। অপরাধীরা এই প্ল্যাটফর্মে অবৈধ ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পাচারও করছে।
প্রতিবেদন আরও জানায়, চীনা ভাষায় এক বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, "আমরা প্রতিদিন বিদেশ থেকে ৩ মিলিয়ন ইউএসডিটি চুরি করি।" টেলিগ্রামের মাধ্যমে অপরাধীরা সংগঠিত অপরাধচক্রগুলোকে টার্গেট করছে এবং এশিয়ার এই অঞ্চলটি এখন বিশ্বজুড়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের অপরাধের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা অপরাধ চক্রগুলো সাউথ-ইস্ট এশিয়া থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মানুষকে লক্ষ্য করছে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের বার্ষিক আয় প্রায় ২৭.৪ বিলিয়ন থেকে ৩৬.৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে বলে অনুমান করা হয়।
টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভকে সম্প্রতি প্যারিসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যেখানে তার বিরুদ্ধে প্ল্যাটফর্মে অপরাধমূলক কার্যকলাপ পরিচালনার অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর দুরভ জানান, তিনি আইন অনুযায়ী ব্যবহারকারীদের আইপি ঠিকানা এবং ফোন নম্বর সরবরাহ করবেন এবং টেলিগ্রামের কিছু বৈশিষ্ট্য অপরাধের জন্য ব্যবহার হওয়া ঠেকাতে সরিয়ে ফেলা হবে।
টেলিগ্রাম নিয়ে এই ঘটনা প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোর দায়িত্ব এবং আইনের প্রয়োগের সীমা নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।